আপনারা যারা স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানোর উপায় জানতে চান, তাহলে অবশ্যই ভালোভাবে আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ুন।
সূচিপত্রঃ স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানোর উপায়
স্তন ক্যান্সার কী
স্তন ক্যান্সার বা স্তন টিউমার একটি প্রানঘাতি রোগ। সময় মত চিকিৎসা করা না গেলে মৃত্যু অবধারিত। তাই সচেতনতাই এই রোগ প্রতিরোধের
শ্রেষ্ঠ উপায়।
গ্লোবাল ক্যান্সার অবজারভেটরি (Globocan)-এর তথ্যমতে, যে ক্যান্সারের কারণে
বাংলাদেশের নারীদের সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটে তা হলো স্তন ক্যান্সার।
শুধুমাত্র ২০২০ সালেই বাংলাদেশে ১৩ হাজারের বেশি নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত
হয় এবং এদের ভেতর প্রায় সাত হাজার নারী স্তন ক্যান্সারের কারণে
মারা যান। পাঁচ বছর ধরে স্তন ক্যান্সার নিয়ে বেঁচে থাকা রোগীর সংখ্যা প্রায় ৩১
হাজারেরও বেশি
স্তন ক্যান্সারের কারণ
স্তন গঠিত হয় fatty, fibrous, এবং glandular কোষ সমষ্টি (কলা) দিয়ে। মানুষের
স্তনের মধ্যে থাকা কোষগুলি যদি হঠাৎ করে নিয়ন্ত্রণের বাইরে বাড়তে শুরু করে,
তখন এই ক্যান্সারের উৎপত্তি হয়। স্তনে থাকা বিভিন্ন কোষগুলির মধ্যে যে কোন
কোষেই এই রোগ হতে পারে। তবে প্রধানত মাতৃ দুগ্ধ উৎপাদনে যুক্ত কোষেই (milk
ducts এর আস্তরণ-কারী কোষ এবং lobules) এই প্রকার ক্যান্সার বেশি দেখা যায়। সেই
কারনে মহিলারাই এই রোগে সর্বাধিক আক্রান্ত হন।
স্তনের মধ্যে থাকা বিভিন্ন কোষগুলির অতিরিক্ত বেড়ে ওঠার কারনে শরীরে স্তনের
আকার বা আকৃতির পরিবর্তন হয়। স্তনের অভ্যন্তরে মাংসল পিণ্ডের (lump) আকার
অনুভূত হয়। যদিও যেকোনো পিণ্ডের মতন আকার স্তনের মধ্যে অনুভব করা মানেই
ক্যান্সার হয়েছে এটা বলা যায় না। এটি একটি সাধারণ tumor ও হতে
পারে।
শুধু মাত্র ম্যালিগন্যান্ট tumor ই মারাত্মক ক্যান্সারের আকার নেয়।
ম্যালিগন্যান্ট স্তন ক্যান্সার রক্ত এবং লসিকা (lymph) বাহিকার মাধ্যমে শরীরের
অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পরতে পারে। এই অবস্থা কে বলা হয় metastasized।
স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসা
ক্যানসারের অনেকগুলো ধরণ আছে। প্রত্যেকটি ধরণই মারাত্মক। তবে এর চিকিৎসাও
আছে। এসব ধরণের মধ্যে অন্যতম স্তন বা ব্রেস্ট ক্যানসার। বিশেষ করে নারীদের
জন্য। স্তন ক্যানসার স্তন কোষে বিকশিত হয়। এটি স্তনের লোবিউল বা নালীতে
সৃষ্টি হয়। স্তন লোবিউল হল সেই গ্রন্থি যেখানে বুকের দুধ (নারীদের ক্ষেত্রে)
উৎপন্ন হয়। এই দুধ লোবিউল থেকে স্তনবৃন্তে স্তন নালী নামে পরিচিত পাতলা নল
দ্বারা পরিবাহিত হয়।
স্তন ক্যানসার তন্তুযুক্ত স্তনের টিস্যুতেও বিকশিত হতে পারে। এ
টিস্যুকে স্ট্রোমাল টিস্যুও বলা হয়। ক্যানসার কোষ সুস্থ স্তন টিস্যু আক্রমণ
করে এবং বাহুতে লিম্ফ নোডগুলোতে বিস্তার লাভ করে। স্তনের ক্যানসার হয় যখন
কোষের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণকারী জিনে মিউটেশন হয়। এই মিউটেশনের কারণে কোষগুলো
অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়তে থাকে।
এসব কোষ সুস্থ কোষগুলোকেও প্রভাবিত করে এবং তাদের স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে বাধা
দেয়।
স্তন ক্যান্সার কমাতে করণীয়
তাজা ফল ও ফ্ল্যাভনয়েডযুক্ত শাকসবজি খেলে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কম
হতে পারে। এ উপাদানটি কোষ বিভাজন নিয়ন্ত্রণ করে। সেই সঙ্গে স্তন ক্যান্সারে
কোষ বৃদ্ধি কম রাখে। বেগুন, টমেটো, গোলমরিচ, আপেল, ব্রকলি ইত্যাদি স্তন
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
নিয়মিত শরীরচর্চা করলে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি এড়ানো যায়। গবেষণায় দেখা গেছে,
প্রতিদিন শরীরচর্চা করলে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ২৫-৩০ শতাংশ কমে যায়।
যেসব নারীরা অতিরিক্ত ধূমপান করেন তাদের স্তন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভবনা
বেশি থাকে। যারা ২০ বছরের বেশি সময় ধরে ধূমপান করছেন, তাদের ৩৫ শতাংশের বেশি
স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে।
অতিরিক্ত ওজন বেড়ে গেলেও স্তন ক্যান্সার হতে পারে।
অসংখ্য ধন্যবাদ প্রিয় পাঠক, এরকম আরও আর্টিকেল পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url